বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক ,
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশ ও সংগঠনমূলক দক্ষতা অর্জনের অন্যতম ক্ষেত্র হলো কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত করে না, বরং তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা, সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগও সৃষ্টি করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে চাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা হয়েছে। ২৮ আগস্ট প্রকাশিত তপশিল অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে এই বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন।
একটি কার্যকর ছাত্র সংসদ ক্যাম্পাসে প্রাণচাঞ্চল্য, গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে। এটি শিক্ষার্থীদের মতামত, ভাবনা ও পরিকল্পনাকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে প্রশাসনের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ স্থাপন করে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, সমস্যার সমাধান ও বিভিন্ন সৃজনশীল উদ্যোগ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চাকসু কার্যকর থাকলে শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, ক্যাম্পাস উন্নয়ন ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে অনুপ্রাণিত হয়।
৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম চাকসু নির্বাচন। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র ছয়বার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পেয়েছিল।
সপ্তম চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন। তিনি ২৮ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৩টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে তপশিল ঘোষণা করেন। এবার ৫৪টি বিভাগ, ১৪টি হল ও ১টি হোস্টেলে মোট ২৫ হাজার ৭৫২ জন ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। নির্বাচনের জন্য গঠন করা হবে ১৪টি কেন্দ্র।
তফসিল অনুযায়ী, ১৪ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হবে, ১৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৭ সেপ্টেম্বর। ১৮ সেপ্টেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশ পাবে প্রাথমিক তালিকা। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত, আর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হবে গণনা।
চাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটিতে মোট ২৮টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক পদ অন্তর্ভুক্ত। খেলাধুলা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, সমাজসেবা, গবেষণা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, ছাত্রী কল্যাণ, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদকীয় পদ ছাড়াও ৫ জন নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ থাকবে শপথ গ্রহণের পর থেকে এক বছর। মেয়াদ শেষ হলে কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হবে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব যাচ্ছে— শিক্ষার্থীরা আশা করছে এই চাকসু হবে ন্যায়, উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের প্রতীক।