বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক ,
বিয়ে এমন এক সুন্দর ব্যবস্থা, যা মানুষকে শালীন, পবিত্র ও পরিপূর্ণ জীবনের পথে নিয়ে যায়। মানব সভ্যতার শুরু থেকেই বিয়ের প্রথা চলে আসছে। ইসলাম এই বন্ধনকে শুধু সামাজিক নয়, বরং বরকতময় এক ইবাদত হিসেবে ঘোষণা করেছে। যে ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্ক এবং আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান, তার জন্য বিলম্ব না করে বিয়ে করা ইমানি দায়িত্ব।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘হে যুবসমাজ, তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, তার বিয়ে করা উচিত। কারণ, বিয়ে দৃষ্টি সংযমে সহায়তা করে এবং লজ্জাস্থান রক্ষা করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে; রোজা তার প্রবৃত্তি সংযত করবে।’ (বোখারি: ৫০৬৫, মুসলিম: ১৪০০)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে, বিয়ের জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিন, মাস বা সময় ঠিক করা হয়নি। বরং প্রস্তুতি ও সামর্থ্য থাকলেই বিয়ে করা উত্তম। এ জন্য প্রয়োজন কিছু মানসিক, আত্মিক ও ব্যবহারিক প্রস্তুতি। প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহর ব্যাখ্যায় বিয়ের আগে জরুরি ৭টি প্রস্তুতি জেনে নেওয়া যাক—
১. নিজেকে পরহেজগার করে তোলা
বিবাহের আগে নিজেকে মুত্তাকি ও নৈতিকভাবে দৃঢ় করে গড়ে তোলা জরুরি। আমরা যেমন ফেরেশতার মতো সঙ্গী চাই, তেমনি নিজেদেরও তেমন হতে হবে। আল্লাহর নিয়ম হলো—যেমন মন, তেমন সঙ্গী। তাই নিজেকে আগে ভালো মানুষে পরিণত করতে হবে।
২. আল্লাহর কাছে দোয়া করা
ভালো জীবনসঙ্গীর জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। সুরা ফুরক্বান (আয়াত ৭৪)-এর দোয়াটি নিয়মিত পাঠ করা অত্যন্ত কার্যকর—
“রব্বানা হাব লানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়া জাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।”
৩. দ্বীনদার সঙ্গী নির্বাচন
জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দ্বীনদারিতা, তাকওয়া, অল্পে সন্তুষ্টি ও দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি থাকা ব্যক্তিকেই বেছে নিতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, দ্বীনদার সঙ্গীই প্রকৃত সাফল্যের চাবিকাঠি।
৪. পারস্পরিক অধিকার জানা
বিয়ের আগে নারী-পুরুষ উভয়কেই একে অপরের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে। দাম্পত্য জীবনের অশান্তির বড় কারণই হচ্ছে অধিকার না জানা বা তা উপেক্ষা করা।
৫. হালাল জীবিকার ব্যবস্থা
পুরুষদের জন্য বিয়ের আগে হালাল উপার্জনের পথ স্থির করা আবশ্যক। কারণ, পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব তার ওপরই বর্তায়। মেয়েদেরও গৃহস্থালি পরিচালনায় দক্ষ হতে হবে। হালাল আয় মানেই বিশাল সম্পদ নয়; বরং সৎভাবে অর্জিত ন্যূনতম উপার্জনই যথেষ্ট।
৬. তালাকের নিয়ম জানা
বিয়ের মতো তালাকও ইসলামে গুরুতর বিষয়। কীভাবে তালাক বৈধ, কোন পদ্ধতিতে তা নাজায়েজ—এসব আগে থেকেই জানা জরুরি। অজ্ঞতার কারণে অনেকেই পরে আফসোস করেন।
৭. পারিবারিক সীমারেখা বোঝা
বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পারিবারিক সীমা ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। কার সঙ্গে দেখা করা, কার সঙ্গে না করা—এসব শরিয়তসম্মতভাবে আগে থেকে বুঝে নিতে হবে।